আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ কোনটি? আপনি নিশ্চয় ভ্যাটিকান সিটির কথাই বলবেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, ভ্যাটিকান সিটির চেয়েও ক্ষুদ্রতম দেশ পৃথিবীতে রয়েছে! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এই দেশের নাম ‘সিল্যান্ড’। দেশটির রয়েছে নিজস্ব রাজধানী, মুদ্রা, ভাষা, পার্লামেন্ট, সরকার এবং জনগণ। অথচ এই দেশটির আয়তন কত জানেন? মাত্র ৫৫০ বর্গমিটার। কি চমকে গেলেন! ভাবসেন এত ছোট আবার দেশ হয় নাকি! কিন্তু বিশ্বাস করুন এটি একটি সার্বভৌম দেশ। চলুন আজকে আমরা চমকপ্রদ এই দেশটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

ভৌগলিক অবস্থান
দেশটির সম্পূর্ণ নাম ‘প্রিন্সিপ্যালিটি অফ সিল্যান্ড’, যাকে সংক্ষেপে সিল্যান্ড বলা হয়। দেশটির অবস্থান ব্রিটিশ সমুদ্র উপকূল থেকে ছয় মাইল উত্তরে। বিস্তীর্ণ নীল সমুদ্র। তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে একটি প্লাটফর্ম। দেশটিতে কোনো ভূখণ্ড বা মাটি নেই। পুরো স্থাপনাটিই একটি কৃত্রিম প্লার্টফর্ম। এটি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন কর্তৃক স্থাপিত একটি সামুদ্রিক দুর্গ। প্রথমদিকে একে ডাকা হতো ‘রাফস টাওয়ার’ নামে। এর কাজ ছিল শত্রু বিমানকে প্রতিহত করা, ইংল্যান্ডের জলসীমায় জার্মান মাইন বসানো পর্যবেক্ষণ করা ও তা সম্পর্কে রিপোর্ট করা।
দেশটির রাজধানীর নাম HM Fort Roughs। এই দেশটি সাগরের উপর ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। মাটি থেকে অনেকটা উপরে দুটো বড় বড় ইস্পাতের পাইপের উপর এই দেশটির অবস্থান। পুরোটা স্থাপনা জুড়েই রয়েছে ইস্পাত। এই দেশটিতে যেতে হলে ইংল্যান্ডের উত্তর উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার সাগরের গভীরে যেতে হবে। দেশটিতে একটিমাত্র ঘর চোখে পড়বে এবং সেটিই এই দেশের রাজপ্রাসাদ। রাজপ্রাসাদের উপর দেশটির পতাকা উড়তে দেখা যাবে।

যুদ্ধের সময় এটি ছিল প্রায় ১৫০-৩০০ জন সৈন্যের আবাসস্থান। সেই সাথে এখানে ছিল বিভিন্ন রাডারের যন্ত্রপাতি, দুটি ৬ ইঞ্চি বন্দুক, এবং দুটি ৪০ মি.মি. অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট অটোমেটিক কামান। এখান থেকে শত্রু যুদ্ধ জাহাজগুলোর ওপর নজরদারি করা হতো। প্রয়োজনে শত্রু জাহাজে আক্রমণ পরিচালনার কাজও চলত। ১৯৫৬ সালে রয়াল নেভি একে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
ইতিহাস
সিল্যান্ড ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কেন্দ্রিক একটি সামরিক স্থাপনা। জার্মানদের মোকাবেলায় ব্রিটিশ রয়াল নেভি এই স্থাপনাটি নির্মাণ করে। ১৯৪৫ সালে যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলো তখন সিল্যান্ডের প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়ে গেল। যুদ্ধে শেষ হওয়ার পরপরই রয়েল নেভি এখান থেকে তাদের যুদ্ধ সরঞ্জামসহ অন্যান্য জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যায় এবং জায়গাটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
বেশ কয়েক বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল সিল্যান্ড। সে সময় ইংল্যান্ডে অবৈধ্য রেডিও সম্প্রচার বেশ ভালো ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করে। এই অবৈধ্য সম্প্রচারকারী দলেরা দেশের মাটিতে টিকতে না পেরে পাহাড়-পর্বত, বনবাদাড়ে আস্তানা গেড়ে বেড়াত। ১৯৬৭ সালে সিল্যান্ডে একটি অবৈধ বেতার সম্প্রচারকারী দল ঘাঁটি গাড়ে। তারা এই স্থানটি তাদের হেলিকপ্টারের ল্যান্ডিং প্যাড হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এবং এখানে আরামে বসবাস করতে থাকে।

কিন্তু তাদের এই সুখ বেশিদিন স্থায়ী হলো না। তাদের এ সুখ দেখে অন্যান্য অবৈধ্য বেতার সম্প্রচারকারীরা জায়গাটি দখল করার জন্য আড়ি পাততে শুরু করল। ঐ বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে আরেক অবৈধ বেতার সম্প্রচারকারী রয় বেটস এখানে এসে ঘাটি গেড়ে বসেন। এরপর ধীরে ধীরে আগের অধিবাসীদের উচ্ছেদ করে এই স্থানটি দখল করে নেন।
মেজর রয় বেটস ছিলেন ব্রিটিশ সেনা অফিসার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লড়াই করেছিলেন ইতালি ও আফ্রিকাতে। বিশ্বযুদ্ধের পর, মেজর বেটস ঠিক করেছিলেন, তাঁর সব ব্যবসা গুটিয়ে রেডিও স্টেশন বানাবেন। কিন্তু তিনি সরকারের কাছ থেকে রেডিও স্টেশন বসানোর অনুমতি পেলেন না।
রয় বেটস এখানে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রেডিও এসেক্স’ নামে একটি অবৈধ্য বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র। আর এই অবৈধ্য সম্প্রচার পরিচালনা করা হতো সিল্যান্ড থেকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো রয় বেটসও এখানে বেশিদিন সুখে থাকতে পারলেন না। ধরা পড়লেন ব্রিটিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। অবশ্য মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনে সে যাত্রায় ছাড়াও পেলেন তিনি। কিন্তু রেডিও স্টেশনের সমস্ত যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করার কারণে তার পক্ষে আর নতুন করে সম্প্রচার পরিচালনা করা সম্ভব হলো না।

রেডিও সম্প্রচার সম্ভব না হলেও রয় বেটস সিল্যান্ডের মায়া ত্যাগ করতে পারলেন না। ১৫ বছর বয়সী ছেলে মাইকেলকে সঙ্গে নিয়ে অনেক কিছু মোকাবেলা করে আবারো উঠে এলেন সাগরের বুকে ভাসতে থাকা সেই টাওয়ারে। এরপর তিনি সম্পূর্ণ রূপে এই স্থাপনাটি দখল করে নেন। এই টাওয়ারটিকে ‘প্রিন্সিপ্যালিটি অফ সিল্যান্ড’ নামের এক সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন। অবশ্য তার এই পাগলামির আড়ালে কলকাঠি নেড়েছেন অন্য একজন।
রয় বেটস যখন জেলে ছিলেন তখন তার উকিল তাকে পরামর্শ দেয় কীভাবে তিনি ওই টাওয়ারটি দখলে নিতে পারবেন। তিনি পরামর্শ দেন, এই স্থাপনাটি আসলে আন্তর্জাতিক জলসীমার মধ্যে অবস্থিত। আর পৃথিবীর কোন দেশই আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। এখানে কোন দেশের নিয়ন্ত্রণ নেই, নেই মালিকানাও। ফলে যে কেউ এখানে ইচ্ছা করলেই ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারবে। এছাড়া এটি ছিল তৎকালীন ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাইরে। ফলে চাইলেও রয়াল নেভি এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি।
কয়েক বছর পরে একটি মজার ঘটনা ঘটলো। ব্রিটিশ নেভির একটি যুদ্ধ জাহাজ সিল্যান্ডের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে রয় বেটস জাহাজটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। কিছুদিন পরেই রয় বেটস যখন ইংল্যান্ডে পা রাখেন, সঙ্গে সঙ্গেই ওই অপরাধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে। রয় ও মাইকেল বেটসের নামে দায়েরকৃত এই মামলা আদালতে উত্থাপন করা হয়। তবে সিল্যান্ড ব্রিটিশ সীমানা ও বিচারব্যবস্থার বাইরে হওয়ায় বেটস পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া যাবে না বলে ঘোষণা দেন বিজ্ঞ আদালত। ফলে সে যাত্রায় বেঁচে যান বেটস।

এরপরও খ্যাপাটে রয় বেটস থেমে থাকলেন না। তিনি তার অদ্ভুত এবং পাগলামি কার্যক্রম চালিয়েই যেতে লাগলেন। ১৯৭৫ সালে প্রকাশ করলেন সিল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় সংবিধান। কয়েক বছরের ব্যবধানে তৈরি করা হলো জাতীয় পতাকা ডাক টিকেট, মুদ্রা, ভিসা এবং পাসপোর্ট। সিল্যান্ডের জাতীয় প্রতীক ও সীলমোহরের নকশা তৈরি করা হয় সিল্যান্ডের জাতীয় নীতিবাক্য “E Mare Libertas” অনুসারে, যার অর্থ, “সমুদ্র হতে, স্বাধীনতা”।
কয়েক বছর পর ঘটলো আরেকটি মজার ঘটনা। ১৯৭৮ সালে জার্মান এক ব্যবসায়ী অস্ট্রিয়াতে রয় বেটসকে সপরিবারে আমন্ত্রণ জানায়। অস্ট্রিয়ায় এসে পৌঁছলে রয় ও তার স্ত্রী জোয়ানকে পাঁচজনের একটি দল স্বাগত জানায় ও ব্যবসায়ীদের সম্মেলনে নিয়ে যায়। কিন্তু ঐ সম্মেলনে এর কার্যক্রম সম্পন্ন না হতেই সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়, এতে সন্দেহর দানা বাঁধে বেটস দম্পতির মানে।
সিল্যান্ডের সাথে টেলিফোন কিংবা রেডিও যোগাযোগ না থাকায় তিনি খোঁজ নিতে পারলেন না। ইংল্যান্ডে এসে পার্শ্ববর্তী জেলেদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন সিল্যান্ডে নাকি বিশাল এক হেলিকপ্টার অবতরণ করেছে। তারা সিল্যান্ড ত্যাগ করার কয়েকদিন পর রয়ের কাছ থেকে পাঠানো একটি চিঠি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে সিল্যান্ডে একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে। কিন্তু অবতরণের সাথে সাথেই তারা রয় কর্তৃক নিযুক্ত তৎকালীন সিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় গোটা সিল্যান্ড দখল করে নেয় এবং ছেলে মাইকেলকে আটক করে।

এই ঘটনার পর পুনরায় বেটস পরিবারের সবাই একত্রিত হয়ে কিছু অস্ত্রশস্ত্র ও জনবল জোগাড় করেন। তাদের মধ্যে জেমস বন্ড সিনেমায় কাজ করা একজন পাইলটও ছিলেন। এরপর তারা সবাই মিলে সিল্যান্ড পুনরুদ্ধার অভিযানে রওনা হন। সেখানে পৌঁছানোর পর মাইকেল লুকিয়ে সিল্যান্ডের ডেকে শটগান হাতে নেমে পড়েন এবং কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। খুব শীঘ্রই সিল্যান্ড দখলকারী দল আত্মসমর্পণ করে। তাদেরকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বহুদিন আটক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে তাদের নিজ নিজ দেশ থেকে তাদের মুক্তির আবেদন করা হলে তাদেরকে সেই দেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এভাবে সিল্যান্ড ফিরে পায় তার স্বাধীনতা। ২০১২ সালে রয় বেটস মৃত্যুবরণ করেন।
আরো কিছু তথ্য
সিল্যান্ড আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোন রাষ্ট্র নয়। পৃথিবীর কোন দেশেই সিল্যান্ডের স্বাধীনতা স্বীকৃতি না দিলেও, কেউ এর বিরোধিতাও করেনি। এছাড়া একমাত্র বেটস পরিবার ছাড়া কেউ এই টাওয়ারের মালিকানা দাবি করেনি। তাই অলিখিতভাবে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ।
মাত্র ৫৫০ বর্গ মিটারের এই রাষ্ট্রটি বর্তমানে পর্যটন ও বিভিন্ন মিউজিক ভিডিও স্থানে পরিণত হয়েছে। গোটা সিল্যান্ডে রয়েছে একটি মাত্র ভবন ও একটি হেলিপ্যাড। বর্তমান কর্তৃপক্ষের দাবী অনুসারে, ২৭ জন মানুষ এখানে বাস করেন। তবে প্রকৃতপক্ষে, এখানে মাত্র ৪ জন স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ইন্টারনেটে সিল্যান্ডের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে। সেখানে সিল্যান্ডের নানা স্মারক, ডাকটিকিট, মুদ্রা ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি চাইলে সিল্যান্ডের লর্ড, ব্যারন, কাউন্ট প্রভৃতি পদবী কিনতে পারবেন। সেই সাথে সিল্যান্ডের পাসপোর্ট করে চাইলে ঘুরেও আসতে পারবেন দেশটি থেকে।

ভ্রমণের পিপাসুদের জন্য সিল্যান্ড সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায় টুরিস্ট ভিসা। হারউইচ বন্দর থেকে সিল্যান্ডের নিজস্ব বোটে চেপে পৌঁছাতে হবে রাফস টাওয়ারের নিচে। উপর থেকে নেমে আসবে দড়ি বাঁধা দোলনা। দোলনা চেপে উঠতে হবে সিল্যান্ডে। ডেকের উপর অবস্থিত বাড়িটি বাইরে থেকে দেখতে সুন্দর না হলেও ভেতরে বেশ গোছানো এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। এখানে রয়েছে অনেকগুলো কক্ষ, মিউজিয়াম, লাইব্রেরী, কফিশপ এবং রেস্টুরেন্ট।
বর্তমানে প্রতিদিন অসংখ্য টুরিস্ট পাড়ি জমান সিল্যান্ডে। উত্তাল সাগরের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট একটি টাওয়ার যা কিনা একটি দেশ! হাস্যকর মনে হলেও বিগত ৫৩ বছর ধরে আন্দোলন এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়েই টিকে আছে এই দেশটি। মাইকেল বেটস বর্তমানে সেদেশের যুবরাজ।
This is a Bengali article. it’s about world’s smallest country ‘Zealand’.
All the reference are hyperlinked within the article
Featured Image: Getty Image






raja999
https://prometei.online/ the Best!
Английский язык 6-й класс: рабочие тетради, учебники и тренажеры купить на 2025-2026 год
учебники и школьная литература: учебники, рабочие тетради, методические материалы и другая учебная литература по низким ценам, с доставкой по Москве и в другие регионы России, на сайте интернет-магазина
https://wrtd.org/art/sovety_po_prohoghdeniyu_infamous_second_son_osnovnye_missii_010__1.html
https://yuvih.ua/ua/katalog/dezkovriki/antisepticheskij-kovrik-100h100h3-sm
porno hayvanla
https://service116.ru/
https://разработка.site/
https://fgvjr.com/pgs/code_promo_163.html
https://remingtoneknl30740.thezenweb.com/1xbet-registration-bonus-code-2026-get-130-free-bet-75271318
https://socialfactories.com/story5661986/1xbet-promo-code-for-registration
https://fixedfloat.ac
https://www.cake.me/portfolios/1xbet-nigeria-promo-code
Вседержитель вам судья
https://fixed-float.to
https://www.magcloud.com/user/promocodeee
https://chris-mueller.23video.com/vandkunsten-architects-torpedohallen-1
https://www.paraibatotal.com.br/news/1xbet_codigo_promocional.html
https://chairman.ru/html/cust/1xbet_promokod_sport_bonus.html
https://mayantu.eu/articles/melbet_promo_code_welcome_bonus.html
https://www.jkfitness.com/wp-content/pags/1xbet_promo_code_ghana__tanzania_end_benin_free_bet__46257.html
https://vaidieuhay.com/art/melbet_promo_codes.html
https://delpoblepizzeria.com/articles/le_code_promo_pour_1xbet.html
https://jaluzi-bryansk.ru/smarty/pags/kakovy_posledstviya_obyyavleniya_lichnogo_bankrotstva.html
включение в реестр Минпромторга
https://stroydomvsochi.ru/
https://www.fritzlerfarmpark.com/profile/codeprom21o79266/profile
https://allmynursejobs.com/author/codespromo1xbet/
1 dollar deposit casinos canada
code promo 1xbet bonus codes
meilleur code promo 1xbet rdc
I’ve been exploring spanking video and I have to say, it’s amazing! From adult spanking stories to engaging videos, the community here is super active. If you enjoy immersive spanking content and want to share your experiences, this is the place to be!
http://mcoefiaq.exgfhsy.tcsq.qypvthu.loqu.forum.mythem.es/aalscholvers/bunweil/rockcity/ancylopoda
https://xn—86-5cdoa3a7cs.xn--p1ai/
Казино с поддержкой 24/7
Лучшие Онлайн казино — это площадки с лицензией, быстрыми выплатами и прозрачными бонусными условиями.
https://antibrand.shop/
https://wakelet.com/@1xbetpromocodefreebet79075
https://www.imdb.com/list/ls4150173316/
https://network-525805.mn.co/members/36229856
https://simpleswap.cx/
https://raydium-io.to/
https://justpaste.it/d343y
https://1xbetandroid.ru
лестница сварная из металла
https://whelex.com/userinfo.php?com=profile&name=Your_Account&username=jamal-florence-477200
Located in the heart of Sukhumvit, Nuru Bangkok brings an exclusive erotic massage experience close to Bangkok’s luxury hotels and nightlife.
https://probilets.com/
https://probilets.com/
https://knowyourmeme.com/users/codebonuslinebet
https://community.atlassian.com/user/profile/5419b74a-3fd7-4244-9e7e-adb3a845a00c
https://www.friend007.com/forums/thread/29823/
https://www.vhs80.com/board/board_topic/6798823/7323061.htm
пускатели
https://bestballs.ru/
купить виртуальный номер
https://audiomack.com/1xbetwelcome67
остеопат одинцово
https://ajourmag.ru/kto-takoj-osteopat-sekrety-professii-i-eyo-znachenie-dlya-zdorovya/
https://www.daniweb.com/profiles/1277612/purdigakko
VPN
https://telegra.ph/freecodes-10-26
https://ekonty.com/blogs/448759/1xBet-Promo-Code-2026-1XHOT777-130-Bonus
https://rapbeatsforum.com/viewtopic.php?t=995629
https://postheaven.net/i0wm0d5d99
https://bioqoo.com/xbetpromocodes
http://sahpes.onlinebbs.ru/viewtopic.php?f=3&t=3018